আজকের ভারতবর্ষে মানুষ অসহায় যুক্তিহীন হয়ে পড়েছে বেশি বেশি করে। তার একটি প্রধান কারণ পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থা। তারা চায় মানুষ ধর্ম নিয়ে মেতে থাকুক। তার জন্য যা যা করার দরকার সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত সমস্ত ব্যবস্থা তারা করে রেখেছে। এই অন্ধ বিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকা অপরিসীম। তারা ‘মানুষ’কে মানুষ হয়ে ওঠার উপাদান দিতে পারুক আর না পারুক ধর্মীয় অমানুষ করার কাজে তাঁদের ছাপ স্পষ্ট। কার্যত এখন ভারত বিভক্ত কে বড় হিন্দু, আর কে বড় মুসলমান এই প্রমাণে। এই খেলা তৈরিতে সরকারও ১০০% সফল। আর এই খেলা চালানোর জন্য পুঁজির কখন অভাব হয় না, সে দূর্গাপূজায় ৬০,০০০ করে দেওয়া থেকে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও ধর্মীয় শিক্ষালয় মাদ্রাসা সরকার দ্বারা পরিচালনা করে। পৃথিবীতে এমন একটি দেশ কোথাও খুঁজে পাবে না তুমি যেখানে খিদের তাড়নায় মানুষ মারা যায় প্রতিনিয়ত, সেখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সরকারের খরচ কয়েক হাজার কোটি। গরিব মানুষ সব থেকে বেশি কায়িক পরিশ্রম করে এবং দিনরাত ভগবান করে, এই পরিস্থিতি থেকে সে মুক্তি পেতে চায় কিন্তু কোনও উপবাস ত্রাতার ভূমিকা নিয়ে তাঁকে মুক্তি দেয় না বরং জোতিষী মশাই শনির দৃষ্টি পড়েছে বা বৃহস্পতির দৃষ্টি নেই বলে পাথর দিয়ে টাকা কামানোর ব্যাবস্থা করেছে মানুষ দিব্যি তা গ্রহণ করে দুঃখ দুর্দশার মধ্য দিয়ে জীবন কাটাচ্ছে।
এরপর এই সমস্ত করে যখন কোন কূল কিনারা পায় না তখন সেই গুরু মন্ত্রে দীক্ষিত হয়। গুরু তাকে ভাল করে ভগবান দর্শনের পথ বলে দেয়। যা বলে তাই দৈববাণী অন্ধের মতো বিশ্বাস করতে থাকে। এই অবধি সব ঠিক ছিল, গুরু আবার নিজের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য তাতে অতি চালাকের সাথে শিষ্যকে দিয়ে তাঁর খ্যাতি প্রচার করতে থাকে। এই গুরুরা ভালো করেই জানে ‘যত শিষ্য তত টাকা’, কিন্তু আপনি মুক্ত মনের মানুষ হয়ে শিষ্যের কাছে জিজ্ঞাসা করবে গুরু সম্পর্কে। শিষ্য যা বিবরণ দেবে তা হল এই তার গুরু খুব সরল ভালমানুষ, নিরামিষ আমিষ, মরা বাড়ি যাওয়া কোন কিছুতেই তার গুরু কোন টাকা পয়সা চায় না। কিন্তু একটু ঠিক খবর নিলে জানা যাবে। গুরু হওয়ার আগে সে হকার কিংবা 420 জাতীয় লোক ছিল। টাকাপয়সা ছিল না, গুরু হওয়ার পর সে কোটিপতি কিছু লাখপতিও আছে। তারা শিষ্য বাড়িয়ে কোটিপতি হওয়ার প্রতিযোগিতায় আছে। শিষ্যরা মোটে বুঝতে চায় না গুরুপ্রীত রাম রহিমের ও তাঁদের মতো 2 কোটি শিষ্য ছিল।
এই ভণ্ড বাবা দের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারে একমাত্র যুক্তিবাদী মন। যুক্তিবাদী মনের একজন করে প্রতিটা গ্রামে গ্রামে তৈরি হলে এই কুযুক্তির অন্ধকার থেকে মানুষকে মুক্তির আলো দেখাতে পারবে। যুক্তিবাদ যখন প্রতিটা ঘরে পৌঁছবে ভন্ড রাজনীতি শেষ হবে। সাথে পুঁজিবাদ ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষ তার অধিকার বুঝতে শিখবে।